কথাসাহিত্যের শিল্পরূপ: স্থান-বোধ

অনুবাদ




কথাসাহিত্যের শিল্পরূপ

মূল: ড্যাভিড লজ

অনুবাদ: শাহীনুর ইসলাম


স্থানবোধ


লা তে আপনি যদি গাড়ি না চালান আপনি কিছু করতে পারবেন না। এখন আমি যদি কিছু পান না করি, তবে কিছু করতে পারবো না। আর গাড়ি চালনা-পান একসঙ্গে সেখানটায় আসলেই সম্ভব না। আপনি যদি আপনার সিটবেল্ট আলগা করেন বা আপনার ছাইটা ফেলে দেন বা আপনার নাক খোঁচান, তাহলে সেটা পরবর্তীতে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নসমূহের আলকাট্রাজ ময়না-তদন্ত হবে। আপনি যদি কোনো বিশৃঙ্খলা, কোনো তারতম্য অনুভব করেন, তবে মেগাফোন আছে, এক সেট নিশানা ঠিক করা স্কোপ আছে, আর আপনার রাগে পুঁতি আঁকা একটা কপটার্ড শুকর আছে।

            তো বেচারা কী করতে পারে? ভ্রেমন্ট হোটেল থেকে বাইরে আসুন। ফুটন্ত ওয়াটসের উপর দিয়ে মূল শহরের আকাশের বিপরীতে ভবনগুলোর বিন্যাস ঈশ্বরের সবুজ শ্লেষ্মা বহন করে। বাঁয়ে হাঁটুন, ডানে হাঁটুন, আপনি ব্যস্ত নদীর তীরে এক ছুঁচো। এ রেস্তোরাঁয় কোনো পানীয় পরিবেশন করা হয় না, এখানে কোনো মাংস পরিবেশন করা হয় না, কোনো বিষমকামীদের পরিবেশন করা হয় না। আপনি আপনার শিম্পাঞ্জীকে শ্যাম্পু করাতে পারেন, আপনার নুনুতে উল্কি আঁকিয়ে নিতে পারেন, চব্বিশ ঘন্টা, কিন্তু আপনি কি দুপূরের খাবার খেতে পারেন? আর আপনি যদি গোমাংস –অ্যালকোহল — স্ট্রিং নিষিদ্ধ, এসব চিহ্ন রাস্তা থেকে দূরে একপাশে ঝলকে ওঠতে দেখেন, তবে তা ভুলে যেতে পারেন। রাস্তাটা পার হওয়ার একমাত্র উপায় হলো সেখানে জন্ম নেওয়া। সকল পেডজিং চিহ্নগুলোতে বলা আছে, হাঁটবেন না, সবগুলো সব সময়। এটাই লস এঞ্জেলসের বার্তা, মূল বিষয়: হাঁটবেন না। ভেতরে থাকুন। হাঁটবেন না। গাড়ী চালান। হাঁটবেন না। দৌড়ান! ক্যাবগুলোর চেষ্টা করেছিলাম। কোনো লাভ হয় নি। ক্যাবগুলোর সবটাই স্যাটারনিয়ান যারা এটা ডানের দিককার নাকি বামের দিককার গ্রহ সে ব্যাপারে নিশ্চিত নয় পর্যন্ত। প্রথম যে কাজটি আপনাকে করতে হবে, প্রত্যেকটা যাত্রায় তাদেরকে শেখাতে হবে কীভাবে চালাতে হয়।

মার্টিন অ্যামিজ মানি (১৯৮৪)



পাঠকের কাছে এর মধ্যে যেমনটা স্পষ্ট হয়ে উঠবে, কথাসাহিত্যের শিল্পরূপকে বিভিন্ন “দিক” এ বিভাজনটা কতকটা কৃত্তিম হয়ে গেছে। কথাসাহিত্যে প্রভাবসমূহ বহুমাত্রিক ও আন্তঃসম্পর্কযুক্ত, প্রত্যেকটা দিক অন্য সবগুলোর সাথে দেয়া-নেয়া করছে। মার্টিন অ্যামিজের মানি  থেকে স্থান বর্ণনার দৃষ্টান্ত হিসেবে যে অনুচ্ছেদটি আমি নির্বাচিত করেছি তা দিয়ে স্কাজ কিংবা পরিচিতিরহিতকরণ এবং এখনো অনালোচিত কিছু বিষয়কে সমান উত্তমরূপে ব্যাখ্যা করা যেতে পারতো। যা বলার আরেকটি উপায় যে ভাল উপন্যাসে বর্ণনা কখনো শুধু বর্ণনা হয় না।

            স্থান-বোধ গদ্য সাহিত্যের ইতিহাসে মোটামুটিভাবে শেষের দিককার ধাপ। মিখাইল বখতিন যেমনটা লক্ষ্য করেন, ধ্রুপদী রোমান্সের নগরীগুলো প্লটের জন্য বিনিময়যোগ্য প্রেক্ষাপট: ইফেসাসও করিন্থ কিংবা সাইরাকুজ হতে পারে, তাদের সম্পর্কে আমাদের যা বলা হয়েছে তা সত্ত্বেও। গোঁড়ার দিককার ইংরেজ ঔপন্যাসিকগণ স্থান সম্পর্কে কদাচিৎ বেশি সুনির্দিষ্ট ছিলেন। যেমন- ডিফো কিংবা ফিল্ডিংয়ের উপন্যাসগুলোর লন্ডনে ডিকেন্সের প্রাণবন্ত, দৃশ্যগত খুঁটিনাটির লন্ডনের অভাব রয়েছে। প্রেমিকা সোফিয়ার খোঁজে টম জোনস যখন রাজধানীতে আসে, তখন কথক আমাদেরকে বলে যে সে

লন্ডনে একেবারে আগন্তুক; আর যেহেতু ঘটনাক্রমে এই প্রথম শহরের এক কোয়ার্টারে এসেছে, যেখানকার অধিবাসীদের হ্যানোভার কিংবা গ্রসভেনর স্কয়ারের (কারণ সে গ্রে ইন লেনের মধ্য দিয়ে ঢোকে) পরিবারদের সাথে যোগাযোগ নেই বললেই চলে, সেহেতু কিছু সময় সে হাঁটে এমনকি সেসব ম্যানশনের পথ খুঁজে পাওয়ার আগ পর্যন্ত যেখানে ভাগ্য অশোভন তাদের থেকে পৃথক হয়েছে…যাদের পূর্বপুরুষরা সুদিনে জন্মানোর ফলে, বিভিন্ন ধরনের মেধা বলে তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ধন-সম্পত্তি ও সম্মান রেখে গেছে।

লন্ডনকে বর্ণনা করা হয় সম্পূর্ণরূপে এর অধিবাসীদের শ্রেণী ও সামাজিক অবস্থানের ভিত্তিতে, যেমনটা লেখকের বক্রাঘাতমূলক দৃষ্টি দিয়ে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পাঠককে শহরটি “দেখানো” র কোনো প্রয়াস নেই, কিংবা প্রথম বারের মতো গ্রামের বাড়ি থেকে আসা এক যুবকের উপর কোনো ইন্দ্রিয় প্রভাবের বর্ণনার প্রয়াস নেই। অলিভার টুইস্ট  এ ডিকেন্সের জ্যাকব দ্বীপের বর্ণনা তুলনা করুন:



এ জায়গায় পৌঁছাতে হলে জলের পাশে থাকা লোকদের মধ্যে সবচেয়ে রূঢ় ও গরীবদের ভীড়ে সরু, সংকীর্ণ ও কর্দমাক্ত রাস্তার গোঁলকধাঁধা ভেদ করে দর্শনার্থীকে যেতে হয়…। সবচেয়ে বেশি সস্তা ও সবচেয়ে কম নাজুক ব্যবস্থা দোকানগুলোতে জড়ো হয়ে আছে; কাপড় পরে থাকার সবচেয়ে স্থুল ও সবচেয়ে আটপৌরে জিনিসপত্র পড়ে আছে বিক্রেতার দরজায়, আর বাড়ির পাঁচিল ও জানালা থেকে ধারা… সে হাঁটে শানের উপর প্রক্ষিপ্ত জীর্ণ বাড়ির সামনের অংশগুলোর নিচ দিয়ে, ফেঁটে যাওয়া দেয়ালগুলো তার চলার সময় মনে হচ্ছে হেলছে দুলছে, চিমনিগুলো অর্ধ-চূর্ণ, পড়ে যাওয়ার মতো অর্ধ-দ্বিধাগ্রস্ত, জানালাগুলো জং ধরা লোহার শিক দিয়ে সুরক্ষিত যার ফলে নির্জনতা ও অবহেলার প্রত্যেকটি কল্পনাযোগ্য চিহ্ন সময় ও ময়লা প্রায় খেয়ে ফেলেছে।

টম জোনস  প্রকাশিত হয় ১৭৪৯ সালে; অলিভার টুইস্ট  ১৮৩৮ সালে। এর মাঝখানে এসেছে রোমান্টিক মুভমেন্ট, যা মানুষের উপর পরিবেশের(milieu) প্রভাব নিয়ে ভাবে, ভূ-দৃশ্যের পরম সৌন্দর্যের দিকে মানুষের চোখ খুলে দেয় আর যথা সময়ে শিল্পযুগে নগর-দৃশ্যের গুরুগম্ভীর প্রতীকবাদের দিকে চোখ খুলে দেয়।

            শহুরে গথিকের ডিকেন্সিয় রীতির শেষের দিককার বাহক হচ্ছেন মার্টিন অ্যামিজ। শিল্প-পরবর্তী নগরীর প্রতি তাঁর মুগ্ধ ও আতঙ্কিত দৃষ্টি অবক্ষয়ের অন্তিম অবস্থায় সমাজ ও সংস্কৃতির ভয়াবহ দৃশ্যের মধ্যস্থতা করে। ডিকেন্সের ক্ষেত্রে যেমনটা হয়েছে, তাঁর সেটিংগুলো তাঁর চরিত্রগুলোর চেয়ে বেশি প্রাণবন্ত মনে হয় যেন রাস্তাঘাট, যন্ত্রপাতি, নাটবল্টুর মতো জিনিসের দানবীয়, ধ্বংসাত্মক আকারে পুনরায় আবির্ভূত হতে মানুষের কাছ থেকে প্রাণটা নিংড়ে নিঃশেষ করে নেয়া হয়েছে।

            মানি  র কথক, জন সেলফ (অ্যামিজও ডিকেন্সের মতো নাম নিয়ে রঙ্গ করতেন) ঠিক জটিল বা সহানুভূতিশীল কোনো চরিত্র নয়। ফাস্ট ফুড ও ফাস্ট গাড়ি, জাঙ্ক ফুড ও পর্নোগ্রাফির প্রতি আসক্ত, লসিকাগ্রন্থির ক্ষয়রোগে আক্রান্ত এক ইউপ্পি সে। তাকে ধনী করে তুলবে এমন একটা ছবির চুক্তি করার চেষ্টায় ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় যাতায়াত করে সে। লন্ডন ও নিউ ইয়র্ক এ্যাকশনের প্রধান জায়গা, যার মধ্যে শারীরিক ও নৈতিক নোংরামিতে নিউ ইয়র্কের প্রাধান্য আছে, কিন্তু সেলফের কাজের প্রকৃতি তাকে অপরিহার্যভাবে সিনেমা শিল্পের রাজধানী, লস এঞ্জেলসে নিয়ে যায় ।

            উপন্যাসটির বাছাইকৃত আঙ্গিকের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে শহুরে পতিত জমির অনর্গল বর্ণনা দেওয়া ও কথকের কুঁড়ে, সুড়ঙ্গ দৃষ্টিসম্পন্ন, অসভ্য ও বর্বর চরিত্রকে প্রকাশ করা — উভয়ই। তাঁর সাহিত্যিক নৈপুণ্যকে রাস্তার ভুঁড়ি ভুঁড়ি অপশব্দ, অশ্লীল, অশোভন ভাষা ও কৌতুকের ছদ্মবেশে ব্যবহার করে তিনি এ দুরূহ কৌশল মোকাবেলা করেন। কথক এমন এক মধ্য-আটলান্টিক ভাষায় কথা বলে যা অংশত গণসংস্কৃতি ও গণমাধ্যম থেকে এবং অংশত অ্যামিজের আপাতগ্রাহ্য উদ্ভাবন থেকে উদ্ভূত। যেমন– এ প্যাসেজের প্রথম প্যারাগ্রাফটির অর্থ উদ্ধার করতে হলে আপনাকে জানতে হবে যে আলকাট্রাজ হচ্ছে ক্যালিফোর্নিয়ার বিখ্যাত একটা কারাগার, আরো জানতে হবে যে “শুকর” হচ্ছে পুলিশের জন্য ব্যবহৃত গালি, জানতে হবে যে “পুঁতি আঁকা” মানে তাক করা, জানতে হবে যে “রাগ” হচ্ছে পরচুলা অর্থে আমেরিকান অপশব্দ (সেলফ যদিও আসল চুল অর্থে ব্যবহার করেছে), আর অনুমান করতে হবে যে “কপটার্ড” এসেছে “হেলিকপ্টার” এর পার্টিসিপল থেকে। শহরের দূষিত আকাশের রূপক, “ঈশ্বরের সবুজ শ্লেষ্মা” ইঙ্গিত দেয় যে ওল্ড টেস্টামেন্টের ঈশ্বর এই নতুন ঈশ্বর সোদোমের প্রতি আক্রোশ প্রকাশ করছে, টি. এস. এলিয়টের “দ্য লাভ সং অব জে. আলফ্রেড প্রুফরক” কবিতার সন্ধ্যা “আকাশে হেলান দিয়ে ছড়ানো/ টেবিলে অসাড় হয়ে পড়ে থাকা কোনো এক রোগীর মতো” চমকে ওঠার মতো, আর ইউলিসিস  এর প্রথম পর্বে স্টিফেন ডিডেলাসের সমুদ্রকে “কাঁচা শ্লেষ্মা” হিসেবে বর্ণনার থেকেও নেয়া। কিন্তু প্রুফরকের যখন উচ্চ-সাংস্কৃতিক ভাব থাকে, আর স্টিফেন যখন  সমুদ্রের জন্য হোমারের প্রিয় বিশেষণ, “মদ-কালো” সচেতনভাবে নকল করছে, অন্যদিকে জন সেলফ তখন স্কুলবালকের নোংরামিতে শুধু মজে পড়ে আছে বলে মনে হচ্ছে, আর তা চিত্রকল্পটির সাহিত্যময় সূক্ষ্মতা থেকে আমাদের ভিন্ন দিকে নিয়ে যায়।

            লস এঞ্জেলসের এই বর্ণনার প্রধান লক্ষণা হচ্ছে অতিশয়োক্তি, বা অতিরঞ্জন। সে ক্ষেত্রে তা দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই  য়ে দেখা আরেকটি স্কাজ কথনের অনুরূপ হয়। কিন্তু অ্যামিজের প্যাসেজটি স্যালিঞ্জারের উপন্যাসে পাওয়ার মতো যে কোনো কিছুর চেয়ে খুব বেশি  আলঙ্কারিক সেট-পিস। এতে বারোয়ারী বিষয়বস্তুর উপর হাস্যরসাত্মকভাবে অতিরঞ্জিত বৈচিত্র্যময় একটা সিরিজ থাকে যে লস এঞ্জেলস মোটর গাড়ির জন্য উৎসর্গীকৃত এবং মোটর গাড়ির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এক শহর (“রাস্তাটা পার হওয়ার একমাত্র উপায় হলো সেখানে জন্ম নেওয়া”); আর থাকে খানিকটা কম সাদামাটা পর্যবেক্ষণের উপর যে আমেরিকা অতি বিশেষায়িত খুচরা দোকানগুলোর পক্ষে, আর থাকে যে আমেরিকান ট্যাক্সি চালকরা প্রায় ক্ষেত্রেই সাম্প্রতিকালের অভিবাসী যারা কোথাও যাওয়ার রাস্তা চেনে না।

            সম্প্রতি বোস্টনে পৌঁছে আমি একটা ক্যাব নিলাম যার চালককে বিমানবন্দরের রাস্তা খুঁজে বের করার আগে রাশিয়ান ভাষায় রেডিও-টেলিফোন পরামর্শের সাহায্য নিয়ে ক্যাবের নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনবার চেষ্টা করতে হয়েছিলো। এ ধরনের অযোগ্যতাকে অতিরঞ্জিত করা দুরূহ ব্যাপার, কিন্তু অ্যামিজ একটা উপায় পেয়ে যান: “ক্যাবগুলোর সবটাই স্যাটারনিয়ান যারা এটা ডানের দিককার নাকি বামের দিককার গ্রহ সে ব্যাপারে নিশ্চিত নয় পর্যন্ত। প্রথম যে কাজটি আপনাকে করতে হবে, প্রত্যেকটা যাত্রায় তাদেরকে শেখাতে হবে কীভাবে চালাতে হয়।” এটি গাড়িতে সিটবেল্টের নিরাপত্তা স্লোগান, “ক্লাঙ্ক, ক্লিক, এভরি ট্রিপ”(প্রতিটি যাত্রায় টুং টাং) এর  প্রতিধ্বনি যা সায়েন্স ফিকশনের পরোক্ষ উল্লেখকে দ্রুত অনুসরণ করে — অ্যামিজের গদ্য সমসাময়িককালের শহুরে চেতনার বর্জ্য (dreck) থেকে চয়িত এমন পাশাপাশি অবস্থানে আনন্দদীপ্ত হয়ে ওঠে। প্রতিধ্বনিটি পুরো প্যাসেজটার সুখদ ও আস্থাশীল, আঙ্গুল-চাপড়ানো ছন্দেও অবদান রাখে, যা আবার এক বিশেষ কাম্য মুহূর্তে ছন্দ মেলানোকে ভেঙ্গে ফেলার হুমকি প্রদান করে (“আপনি আপনার শিম্পাঞ্জীকে শ্যাম্পু করাতে পারেন, আপনার নুনুতে উল্কি আঁকিয়ে নিতে পারেন,”)।



            স্থানের বেশিরভাগ সেট-পিস বর্ণনার (স্যার ওয়াল্টার স্কটের উপন্যাসগুলো প্রচুর দৃষ্টান্ত বহন করে) ক্ষেত্রে বিপদটা হলো যে কথনের মজাকে বাতিল করে পরপর সুগঠিত ঘোষণামূলক বাক্য পাঠককে ঘুমকাতুরে করে তোলে। এখানে সে ঝুঁকি নেই। এর মধ্যে দিয়ে বর্তমান কালে স্থান ও কথকের গতিবিধি বর্ণনা করা হয়েছে। ক্রিয়াবাচক ভাব (“হোটেল থেকে বাইরে আসুন”) থেকে প্রশ্নবোধকে (“কিন্তু আপনি কি দুপূরের খাবার খেতে পারেন?”), প্রশ্নবোধক থেকে আদেশমূলকে (“হাঁটবেন না। গাড়ী চালান। হাঁটবেন না। দৌড়ান!”) চলে যাওয়া আর মধ্যম পুরুষে সরলীকরণ করার প্রক্রিয়ার মধ্যে (“বাঁয়ে হাঁটুন, ডানে হাঁটুন”) — পাঠককে জড়ানো থাকে। এ ধরনের জিনিসের অনেক পৃষ্ঠার পর আপনি ক্লান্তিবশত ঘুমিয়ে পড়তে পারেন, তবে বিরক্তিবশত নয়।


  আগের পর্ব                                                                                                                                    পরের পর্ব




Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*